1. admin@banglarsangbadprotidin.com : admin :
  2. banglarsangbadprotidin@gmail.com : banglar sangbad : banglar sangbad
১২ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২৭শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| হেমন্তকাল| বুধবার| রাত ৪:৪২|

রাজপরিবারে ফিরতে চান প্রিন্স হ্যারি

রিপোর্টার নাম:
  • আপডেট সময় : শনিবার, ৩ মে, ২০২৫
  • ১২২ বার পড়া হয়েছে

বার্তা ডেক্স//

শেষ অবধি নিজ বাসভূমিতেই ফিরে আসার আকুলতা প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারি। কিং চার্লস ও প্রিন্সেস ডায়ানা দম্পতির পুত্র প্রিন্স হ্যারি ২০২০ সালে স্ত্রী মেগান মার্কেলের হাত ধরে রাজপরিবার ত্যাগ করেন।

রাজকীয় জৌলুস ছেড়ে সাধারণ মানুষের জীবন বেছে নিয়ে তিনি পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। পরবাসী জীবন বেছে নেওয়ার প্রায় পাঁচ বছর পর হ্যারি এখন রাজপরিবারে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
হ্যারির বাবা কিং চার্লস ক্যানসার আক্রান্ত। তার আয়ু কমে আসছে-এ অনুভবই হ্যারিকে অন্তর থেকে বদলে দিয়েছে। এ কারণেই জীবনের বাকি সময়টা বাবার পাশে থাকার বাসনা প্রকাশ করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, বাবার সঙ্গে আর কোনো লড়াই নয়।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন প্রিন্স হ্যারি। সাক্ষাৎকারে রাজা চার্লসের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেন তিনি। রাজপরিবার ছাড়ার পর যে মামলা করেছিলেন, তাতেও হেরে গেছেন প্রিন্স হ্যারি। মামলায় তিনি অভিযোগ করেছিলেন, যুক্তরাজ্যে তার নিরাপত্তা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। মামলায় হেরে গিয়ে তিনি এখন ‘বিপর্যস্ত’। ফলে সাসেক্সের ডিউক প্রিন্স হ্যারির কণ্ঠে হতাশার সুরও ঝরে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিধ্বস্ত হ্যারি সব মিটমাট করে আবার রাজপরিবারে ফিরতে চান।

শুক্রবার (২ মে) যুক্তরাজ্যের আদালতে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত মামলার রায় হয়। মামলায় হেরে যাওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় বসে বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেন হ্যারি।

মামলা প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ডিউক অব সাসেক্স বলেন, নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিষয়গুলোর কারণে এখন রাজা আমার সঙ্গে কথা বলেন না। তবে আমি আর বিরোধ বা কোনো দ্বন্দ্বে যেতে চাই না। আমি জানি না, আমার বাবার জীবনে আর কতটা সময় বাকি।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে রাজা চার্লসের ক্যানসার ধরা পড়ার পর থেকেই প্রিন্স হ্যারি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। ২০২০ সালে রাজপরিবার ছেড়ে স্ত্রী মেগান মার্কেলকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান হ্যারি। এরপর থেকেই যুক্তরাজ্য সরকার তার নিরাপত্তা-ব্যবস্থা সীমিত করে দেয়।

তবে যুক্তরাজ্যে অবস্থানের জন্য স্ত্রী ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কেল, তাদের পুত্র প্রিন্স আর্চি হ্যারিসনসহ নিজের পরিবারের জন্য পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা-ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আইনি লড়াই চালিয়ে আসছিলেন হ্যারি। কিন্তু যুক্তরাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, তাকে আর আগের মতো সরকার-প্রদত্ত নিরাপত্তা দেওয়া হবে না এবং প্রতিটি সফরের নিরাপত্তা আলাদাভাবে বিবেচনা করা হবে।

আদালতের রায়ের বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় হ্যারি বলেন, আমি হতবাক! আমার সবচেয়ে খারাপ শঙ্কাগুলো সত্যি হয়ে গেল। আমি হতাশ। এমন নয় যে মামলায় হেরে গেছি, বরং যারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে, তারা মনে করে এটা সঠিক। তারা কি এতে জিতেছে? হ্যারির দাবি, ওই সিদ্ধান্তে রাজপরিবারের প্রভাব ছিল।

রেভেক হলো সেই কমিটি যা ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, কূটনীতিক, বিচারপতি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য নিরাপত্তা-ব্যবস্থা নির্ধারণ ও অনুমোদন করে। কে কতটা ও কোন মাত্রার নিরাপত্তা পাবেন, সেটি নির্ধারণ করে এই কমিটি। ২০২০ সালে প্রিন্স হ্যারি রাজকীয় দায়িত্ব ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার পর তার ‘স্বয়ংক্রিয় নিরাপত্তা সুবিধা’ প্রত্যাহার করে নেয় রেভেক। পরে হ্যারি কমিটির ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই শুরু করেন। তার অভিযোগ ছিল, রেভেকের সিদ্ধান্তে রাজপরিবারের পক্ষপাত ও হস্তক্ষেপ ছিল এবং তার নিরাপত্তায় ঘাটতি ছিল। কিন্তু আদালত হ্যারির আবেদন আমলে না নিয়ে রেভেকের সিদ্ধান্তকেই বৈধ বলে রায় দেয়।

প্রিন্স হ্যারি বলেন, আমি রাজা চার্লসকে কখনও বলিনি হস্তক্ষেপ করুন। আমি শুধু বলেছিলাম, সরে দাঁড়ান এবং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের কাজ করতে দিন। আমার নিরাপত্তা রাতারাতি সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায় থেকে ন্যূনতম ঝুঁকিতে নামিয়ে আনা হয়। এটা কি সম্ভব? আর কারা এর পেছনে ছিল, সেটাও এখন পরিষ্কার।
সাক্ষাৎকারে হ্যারি আরও বলেন, এই নিরাপত্তাহীনতা আমাকে প্রতিদিনই প্রভাবিত করে। এখন কেবল রাজপরিবারের কোনো আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পেলে যুক্তরাজ্যে যেতে পারি। কারণ তখনই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়। আমি আমার দেশকে ভালোবাসি, সবসময় ভালোবেসেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, এখন আমার সন্তানদের নিজের মাতৃভূমি দেখাতে পারছি না।

২০২০ সালে রাজপরিবার তাদের (হ্যারি ও মেগান) নিরাপত্তাহীন অবস্থায় ফেলেছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি। হ্যারি বলেন, তারা জানত আমরা ঝুঁকিতে, তবু আমাদের ফেরানোর উদ্দেশ্যে নিরাপত্তা তুলে নিয়েছিল। কিন্তু যখন দেখল আমরা ফিরিনি, তখনও কি আমাদের নিরাপদ রাখা তাদের দায়িত্ব নয়? আদালতের রায় থেকে স্পষ্ট, এই পথে আর আইনি সমাধান পাওয়া সম্ভব নয়। কেউ যদি আগেভাগেই বিষয়টি আমাদের জানিয়ে দিত, তাহলে এত দূর আসতাম না।
সাক্ষাৎকারের শেষ দিকে হ্যারি বলেন, এই ঘটনাগুলোর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পারিবারিক একটি দ্বন্দ্ব। পাঁচ বছর পর আমরা এমন একটি জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি, যেখানে পুরো বিষয়টাই এক ছাদের নিচে আমাদের আটকে রাখার সিদ্ধান্ত থেকে শুরু হয়েছিল। এটা খুবই দুঃখজনক।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কেয়ার স্টারমার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করে হ্যারি আরও বলেন, আপনারা আমার নিরাপত্তাসংক্রান্ত মামলাটিতে সহযোগিতা করুন। রেভেক কমিটির গঠন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াও খতিয়ে দেখুন।

শুক্রবার দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রিন্স হ্যারি বলেন, আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কুপারকে চিঠি লিখব, যাতে তিনি বিষয়টি দ্রুত আমলে নেন এবং রেভেক কমিটির কাজকর্ম পুনরায় খতিয়ে দেখেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ
© All rights reserved © 2014 banglarsangbadprotidin.com