
আন্তর্জাতিক ডেস্ক//
ইস্তাম্বুলে অনমনীয় অবস্থানে আফগানিস্তানের প্রতিনিধি দল। ফলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে চলমান শান্তি আলোচনা অচলাবস্থায় পড়েছে।
পাকিস্তানের মূল দাবি, আফগান মাটিতে সক্রিয় সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংসের জন্য একটি স্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা। কিন্তু তা নিয়ে কোনও অগ্রগতি হয়নি।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। সোমবার দুই দেশের মধ্যে তুরস্কের মধ্যস্থতায় আরও এক দফা বৈঠক হয় ইস্তাম্বুলে। কিন্তু আলোচনা কোনও ফল দেয়নি।
কারণ তালেবান প্রতিনিধিদল পাকিস্তানের চাওয়ায় লিখিত নিশ্চয়তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এক নিরাপত্তা সূত্র জানায়, আলোচনার তৃতীয় দিনও নানা জটিলতায় ভুগছে।
পাকিস্তান যে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত দাবিগুলো তুলেছে, সেগুলো বৈধ। কিন্তু আফগান তালেবান প্রতিনিধি দল তা পুরোপুরি মানতে রাজি নয়।
পাকিস্তানও তাদের অবস্থান থেকে সরতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা জানিয়ে দিয়েছে, তালেবান প্রশাসনের সঙ্গে যে কোনও সহযোগিতা নির্ভর করবে নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিকে তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), বেলুচ সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলোকে আফগান ভূখণ্ড থেকে উচ্ছেদ করার দৃশ্যমান পদক্ষেপের ওপর।
আরেক কর্মকর্তা বলেন, ইসলামাবাদের বার্তা স্পষ্ট, সন্ত্রাসের বিষয়ে কোনও ছাড় নেই। পাকিস্তান টিটিপি নেটওয়ার্ক ভেঙে ফেলার এবং সীমান্তপারের হামলা রোধে যাচাইযোগ্য ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
যদিও আফগান প্রতিনিধিরা পাকিস্তানের কিছু প্রস্তাবের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন বলে জানা গেছে, তবুও তারা কাবুল বা কান্দাহার থেকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পাননি। ফলে আলোচনার পরিসর সীমিত থেকে গেছে।
এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, আফগান প্রতিনিধি দল নিজেরাও জানে পাকিস্তানের দাবিগুলো বাস্তবসম্মত। কিন্তু তারা কাবুলের নির্দেশ অনুযায়ী চলছে।
মনে হচ্ছে কাবুলে কিছু প্রভাবশালী গোষ্ঠী অন্য কোনো এজেন্ডায় কাজ করছে। রবিবারের নয় ঘণ্টার বৈঠকে পাকিস্তান আবারও তার একদফা অবস্থান স্পষ্ট করে জানায়, দুই দেশের মধ্যে শান্তি ও সহযোগিতা তখনই সম্ভব যখন আফগান পক্ষ পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে থাকা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।
ওদিকে পাকিস্তান আইএসপিআরের বিবৃতিতে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ সম্পর্কে বলা হয়, এই অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা এমন এক সময় ঘটছে যখন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের প্রতিনিধিদল তুরস্কে আলোচনায় বসেছে- যা আফগান অন্তর্বর্তী সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করছে।
ইসলামাবাদ বারবার কাবুলকে আহ্বান জানিয়েছে কার্যকর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে এবং দোহা চুক্তির আওতায় আফগান ভূখণ্ড সন্ত্রাসীদের ব্যবহার না করার অঙ্গীকার পূরণ করতে।
তবে কূটনৈতিক সূত্র বলছে, তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু কাবুল প্রশাসন টিটিপির বিরুদ্ধে কঠোর নির্দেশ না দিলে অগ্রগতি অসম্ভব।
তুরস্ক ও কাতার উভয়েই মনে করে পাকিস্তানের দাবিগুলো যৌক্তিক ও ন্যায্য। একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তান বারবার বলেছে এই দাবিগুলো মানা উভয় পক্ষের স্বার্থে।
মধ্যস্থতাকারী দেশগুলিও একই বার্তা আফগান প্রতিনিধিদলকে দিয়েছে।