
গোলাম মাহমুদ-প্রিন্স
বিভাগয়ী শহর বরিশালে শেষ সময়ে জমে উঠেছে ঈদ মার্কেট। নগরীর একাধিক মার্কেটসহ বিপণিবিতানগুলোতে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এ বছর ছেলেদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছে পাঞ্জাবি, অন্যদিকে মেয়েদের তালিকায় রয়েছে পাকিস্তানি থ্রি পিস। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ঈদ পোশাকে দেড় থেকে প্রায় দুই গুণ দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। দাম নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে।ঈদ কেনাকাটা নির্বিঘ্ন করতে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে গড়ে তোলা হয়েছে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা বলয়। নিয়মিত অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর সদর রোড, চকবাজার, কাঠপট্টি, গির্জা মহল্লা, মহসিন মার্কেট ও সিটি মার্কেটে অন্যান্য সময়ের তুলনায় ভিড় বেড়েছে। এসব স্থানে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার বাসিন্দারা কেনাকাটা করে থাকেন।এ বছর ছেলেদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে প্রতি বছরের মতোই পাঞ্জাবি। তবে নারীদের শাড়ির কদর কমে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানি থ্রি পিস। ক্রেতারা দেশি—বিদেশি ব্র্যান্ডের পোশাক, জুতা, গহনা থেকে শুরু করে হরেক পণ্যের দোকানে ভিড় করছেন। ১৫ রমজানের পর থেকে ক্রেতাদের পদচারণা বাড়লেও আশানুরূপ বিক্রি বাড়েনি বলে দাবি বিক্রেতাদের।ক্রেতাদের যাতায়াতে বরিশাল নগর পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এর আওতায় ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা কাজ করছেন যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকে মাঠে রয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। তারা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আটকে চালাচ্ছেন তল্লাশি। অপরাধীদের আনছেন আইনের আওতায়।নগরীর বাংলাবাজার এলাকার খোরশেদ আলম বলেন, এ বছর দেড় থেকে দুই গুণ পর্যন্ত পোশাকের দাম বেড়েছে। তারপরও অন্যান্য খরচ কমিয়ে পরিবারের জন্য বিভিন্ন পোশাক কিনেছি। নিজের জন্য একটি পাঞ্জাবি কিনেছেন বলে জানান তিনি।সাগরীর বাসিন্দা ক্রেতা সুমাইয়া বলেন, আমি পছন্দের পাকিস্তানি থ্রি পিস কিনেছি। তবে দাম বেশি নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তারপরও ছোট বোনের সঙ্গে একই ডিজাইনের পোশাক পরতে এই ড্রেস কিনেছি।বিক্রয়কর্মী আলামিন বলেন, এ বছর জিন্স, শার্ট, টি শার্ট ও পাঞ্জাবির নতুন নতুন ডিজাইন বাজারে এসেছে। তবে বেশি চাহিদা পাঞ্জাবির। আমাদের শো রুমে আড়াই হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার পাঞ্জাবি রয়েছে। তবে বেশি বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার থেকে সাত হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবি।চকবাজারের একাধিক খুচরা পোশাক বিক্রেতা জানিয়েছেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর পোশাকের দাম বৃদ্ধির কারণে বিক্রি কমে গেছে। ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে পোশাক দেখলেও কিনছেন কম। বিশ্ববাজারে সুতাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের দাম বেড়েছে। তাই পাইকারি বাজার থেকে গত বছরের চেয়ে বেশি পোশাক কিনতে হচ্ছে বলে জানান খুচরা বিক্রেতারা।ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বরিশাল জেলার সহকারী পরিচালক সুমি রাণী মিত্র বলেন, ঈদ মার্কেটে কেনাকাটা নির্বিঘ্ন করতে প্রতিদিন অভিযান চলছে। অভিযানে গুরুতর অনিয়ম পেলে দণ্ড ও লঘু অপরাধে সতর্ক করা হচ্ছে।চকবাজার কাঠপট্টি লাইনরোড পদ্মাবতি ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুর রহিম বলেন, ঈদ বাজারে আশানুরূপ বেচাবিক্রি এখনো শুরু হয়নি। রোজার শেষ দিকে এসে কিছুটা বিক্রি বাড়তে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।বরিশাল পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদ কেনাকাটা নির্বিঘ্ন করতে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। সড়কে যানজট এড়াতে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা। এছাড়াও পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরো বাজার মনিটরিং করছে বলে জানান তিনি।